Saturday, 19 December 2020

রাম ভরতের মিলন কবিতার মূলভাব

 














রাম লক্ষন শত্রুঘ্ন ও ভরতের পরিচয়:

দশরথ ছিলেন কোশল রাজ্যের রাজা, তার রাজধানী ছিল অযোধ্যা নগরীতে। তার তিন স্ত্রী ছিল  কৌশল্যা, কৈকেয়ী ও সুমিত্রা। দীর্ঘদিন অপুত্রক অবস্থায় থাকার কারণে পুত্রকামনায় রাজা দশরথ পুত্র-কামেষ্টী বা পুত্রেষ্টী যজ্ঞের আয়োজন করেন। এরপরই কৌশল্যার গর্ভে রাম, কৈকেয়ীর গর্ভে ভরত এবং সুমিত্রার গর্ভে লক্ষ্মণ ও শত্রুঘ্ন নামে দুই যমজ পুত্রের জন্ম হয়। 

সীতার পরিচয় :

এই সময়ে মিথিলার রাজা ছিলেন জনক। একদিন ভূমিকর্ষণ করতে গিয়ে রাজা লাঙলের রেখায় একটি শিশুকন্যাকে কুড়িয়ে পান। আনন্দে অভিভূত রাজা এই কন্যাটিকে ঈশ্বরের দান মনে করে লালন পালন করতে থাকেন। তিনি এই কন্যার নামকরণ করেন সীতা। কারণ, সংস্কৃতে লাঙলের কর্ষণরেখাকে সীতা বলা হয়।সীতা বিবাহযোগ্যা হলে রাজা তার বিবাহের জন্য স্বয়ম্বরের আয়োজন করেন। শিব রাজা জনককে একটি ধনুক উপহার দিয়েছিলেন। রাজা পণ রাখেন যিনি এই ধনুকে গুণ সংযোজন করতে পারবেন, তাকেই অপরূপা সীতা পতিত্বে বরণ করবে। ঋষি বিশ্বামিত্র রাম ও লক্ষ্মণকে নিয়ে সেই স্বয়ম্বর সভায় উপস্থিত হলেন। কেবলমাত্র রামই সেই ধনুকে গুণ পরিয়ে তা ভঙ্গ করতে সমর্থ হলেন। রামের সঙ্গে সীতার বিবাহ হল। শুধু তাই নয়, দশরথের অন্যান্য পুত্রদের সঙ্গে জনকে অন্যান্য কন্যা ও ভাগিনেয়ীদের বিবাহ সম্পন্ন হল। মিথিলায় মহাসমারোহে বিবাহ উৎসব উদযাপিত হল। অতঃপর নববিবাহিত দম্পতি চতুষ্টয় অযোধ্যা নগরে প্রত্যাবর্তন করলেন।




রাম ভরতের মিলন: 

রাম ও সীতার বিবাহের বারো বছর পর বৃদ্ধ রাজা দশরথ রামকে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। কোশল রাজসভায় তার ইচ্ছাকে সকলেই সমর্থন করল।
কিন্তু উক্ত অনুষ্ঠানের পূর্বসন্ধ্যায় দাসী মন্থরার কুমন্ত্রণায় কৈকেয়ীর ঈর্ষা জাগরিত হয়ে উঠল। বহুকাল পূর্বে রাজা দশরথ কৈকেয়ীকে দুটি বর দিতে প্রতিশ্রুত হয়েছিলেন। তার সুযোগ কৈকেয়ী রাজার কাছে দাবি করেন যে রামকে চোদ্দো বছরের জন্য বনবাসে পাঠাতে হবে এবং তার স্থলে ভরতকে যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত করতে হবে। বৃদ্ধ ও হতাশ রাজা নিজ প্রতিজ্ঞা রক্ষার দায়েই কৈকেয়ীকে প্রার্থিত বরদুটি প্রদান করতে সম্মত হলেন। রাম পিতার আজ্ঞা স্বেচ্ছায় ও শান্তচিত্তে মেনে নিলেন।পত্নী সীতা ও ভ্রাতা লক্ষ্মণ তার সঙ্গী হলেন। রাম সীতাকে নিরস্ত করতে গেলে সীতা উত্তর দিলেন, "যে বনে তুমি বাস করবে, সে বনই আমার নিকট অযোধ্যা; কিন্তু যে অযোধ্যায় তুমি নেই, সে অযোধ্যা আমার নিকট দুঃসহ নরক।"রামের প্রস্থানের পর পুত্রশোকে কাতর হয়ে রাজা দশরথ দেহত্যাগ করলেন। এই ঘটনার সময় ভরত ছিলেন তার মাতুলালয় নন্দীগ্রামে। সব শুনে ভরত সত্বর অযোধ্যায় ফিরে এলেন। তিনি মায়ের কুটিল চক্রান্তে পাওয়া রাজপদ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করলেন। রামকে খুঁজতে খুঁজতে তিনি উপস্থিত হলেন বনে। তিনি রামকে অযোধ্যায় ফিরে রাজপদ গ্রহণের অনুরোধ জানালেন। কিন্তু পিতার আজ্ঞার বিরুদ্ধাচারণ করে চোদ্দো বছর কাল উত্তীর্ণ হওয়ার পূর্বে অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তনে অসম্মত হলেন। ভরত তখন রামের খড়মদুটি চেয়ে নিলেন। রাজ্যে ফিরে সেই খড়মদুটিই সিংহাসনে স্থাপন করে রামের নামে রাজ্যশাসন করতে লাগলেন তিনি।

No comments:

Post a Comment

Thank you for commenting and stay with Tripura school classes . I hope you will learn something from tripura School Classes.

পলাশীর যুদ্ধ

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ইংরেজরা বুঝিতে পারিলেন , যাবৎ এই দুর্দান্ত বালক বাঙ্গালার সিংহাসনে অধিরূঢ় থাকিবেক , তাবৎ কোন প্রকারে ভদ্রস্থতা নাই...